ঢাকা, (এবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ ২৪.কম ) : পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, দেশের বহুল কাঙ্ক্ষিত পদ্মা বহুমুখী সেতু একটি মহাকাব্য, এই সেতু জাতিকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাবে। বেনজীর আহমেদ এবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ ২৪.কম-এর সঙ্গে আলাপকালে বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের সমগ্র জাতির জন্য একটি গর্বের বিষয়। বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে এমন একটি মেগা প্রকল্প নির্মাণ করে তার সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে।
তিনি বলেন, প্রমত্তা পদ্মা নদীর ওপর স্বপ্নের সেতুটি রাজধানী ঢাকা এবং দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম জেলাগুলোর সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করেছে।
তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালু হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলোর মানুষের দুর্ভোগ কমবে এবং তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন হবে।’
আইজিপি আগামীকাল লাখ লাখ মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে পদ্মা সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানের ঐতিহাসিক মুহূর্তটি উদযাপন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমার টাকায় আমার সেতু/ বাংলাদেশের পদ্মা সেতু’র শুভ উদ্বোধনের সাথে সাথে আগামীকাল (২৫ জুন) থেকে বিশ্ব মঞ্চে একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে আমাদের নবযাত্রার সূচনা হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি এ নবযাত্রার অগ্রদূত।’
প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, চীনা ঠিকাদার কোম্পানি চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) সেতুটি নির্মাণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর এই সেতুর নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন। ২০১৭ সালের ৭ অক্টোবর শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টে পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যান বসানো হয়।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রী ২০১৩ সালের ১২ নভেম্বর জাজিরা প্রান্তে অ্যাপ্রোচ রোড এবং মাওয়া প্রান্তে সার্ভিস এরিয়া-২ কাজের উদ্বোধন করেন।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের (বিবিএ) অধীনে ১৯৯৮-১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সরকারের অর্থে এই সেতু প্রকল্পের প্রাক-সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালিত হয়। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ২০০৩-২০০৫ সালের মধ্যে এই সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন করে।
এইসিওএম-এর নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পরামর্শদাতারা পদ্মা বহুমুখী সেতুর বিশদ নকশা প্রস্তুত করেন। দলটিতে এইসিওএম, এসএমইসি ইন্টারন্যাশনাল, নর্থওয়েস্ট হাইড্রোলিক কনসালট্যান্টস ও এসিই কনসালট্যান্টস এবং এএএস-জ্যাকোবসেন ও এইচআর ওয়ালিংফোর্ড-এর অতিরিক্ত সহায়তা নিয়ে গঠিত হয়।
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের ফলে দেশের জিডিপি (গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট) ১.৫ থেকে ২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।
সেতুটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনৈতিক দৃশ্যপট পাল্টে দেবে। পাশাপাশি এটি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশকে সংযুক্ত করবে এবং যোগাযোগ, বাণিজ্য, শিল্প, পর্যটন এবং অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে অবদান রাখবে।
এদিকে পদ্মা সেতুর মাধ্যমে মংলা, পায়রা, বরিশাল, যশোর, ফরিদপুর, নড়াইল, বাগেরহাট, পিরোজপুর ও খুলনা রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্য শহরের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হবে এবং এর ফলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, রপ্তানি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়াবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের অঙ্গীকার অনুযায়ী এ মেগা প্রকল্প নির্মাণের মাধ্যমে পূর্ণতা পেয়েছে।